প্রকাশ: ২০২০-০৩-০৩ ১৯:৪৬:৩৪ || আপডেট: ২০২০-০৩-০৩ ১৯:৪৬:৩৪
দেশ ও পরিবারের স্বার্থেই বাংলাদেশিদের আপাতত বিদেশে যাওয়া কিংবা বিদেশ থেকে দেশে ফেরা বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, আমরা চাই না বাংলাদেশ করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হোক। একইসঙ্গে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশে না আসার অনুরোধ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নিশ্চয়ই প্রবাসী বাংলাদেশিরাও চান না তাদের মাধ্যমে দেশের মানুষ কিংবা পরিবারের কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হোন।
মঙ্গলবার (৩ মার্চ) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি যারা বিদেশে চাকরি করেন, জরুরি প্রয়োজন না হলে দেশে আসা এড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। দেশের সব জেলায় সিভিল সার্জনদের মাধ্যমে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। চিকিৎসক, নার্সদের প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস শনাক্তে পর্যাপ্ত কিট রয়েছে। দেশের প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ১০ সদস্যবিশিষ্ট পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের আক্রান্ত দেশগুলো করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে শুরুতে যেসব অবহেলা করেছিল আমরা তা করিনি। সবদিক দিয়েই করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সুতরাং দেশে কোনও কারণে করোনা ভাইরাস এলেও তা বড় কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালনের কোনও অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে না।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বের ৬০টি দেশ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত অনেক দেশে বাংলাদেশিরা কাজ করেন। মধ্যপ্রাচ্য ও ইতালিতেও অনেকেই কাজ করেন। সেখানেও করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, সারাবিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে কোভিড-১৯ নামের এই করোনা ভাইরাস। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ইতোমধ্যে প্রায় ৬০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসটি। আর এতে আক্রান্ত হয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। চীনের পর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ কোরিয়া। আর ইতালি ও ইরানের পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। একইসঙ্গে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যেও। বিশ্বজুড়ে ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৮৬ হাজার। এরমধ্যে বেশিরভাগই চীনের নাগরিক।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস গোটা বিশ্বে যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মাসখানেক আগে তারা ঠিক এই আশঙ্কাই করেছিল। তখন তারা জানিয়েছিল, অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলোতে ভাইরাস ছড়িয়ে গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। এখন সেই পরিস্থিতির দিকেই ক্রমশ এগোচ্ছে বিশ্ব।-বাংলা ট্রিবিউন