প্রকাশ: ২০২০-০৩-১২ ১৪:৪৭:২১ || আপডেট: ২০২০-০৩-১২ ১৪:৪৭:২১
নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধন করেছেন প্রধামনন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বহুল প্রতীক্ষিত এক্সপ্রেসওয়েটির উদ্বোধন করেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হলো এক্সপ্রেসওয়েটি।
একইসঙ্গে ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের আওতায় খুলনা, বরিশাল ও গোপালগঞ্জ সড়ক জোনে নির্মিত ২৫টি সেতু এবং তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু নির্মাণ (সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় কর্ণফুলী (শাহ আমানত সেতু) সেতুর ছয়লেন বিশিষ্ট আট কিলোমিটার এপ্রোচ সড়কও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভ্রমণের সময় কমানোর পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর লোকদের জন্য আরামদায়ক ও নিরবচ্ছিন্ন যাতায়াত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হয়।
এক্সপ্রেসওয়ের ঢাকা প্রান্ত থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার। এক্সপ্রেসওয়ে ধরে এই দূরত্ব অতিক্রম করতে সাধারণভাবে সময় লাগবে মাত্র ৪২ মিনিট। আর ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার দূরত্বে যেতে সময় লাগবে ২৭ মিনিট। অবশ্য এখনই ঢাকা থেকে সরাসরি ভাঙ্গা পর্যন্ত যাওয়া যাবে না। পদ্মা সেতু হওয়ার পর এই সুফল ভোগ করা যাবে।
সংশ্লিষ্ট প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও মুন্সিগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তফা জানান, রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের জুলাই মাসে। ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণকাজ আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। বাকি ছিল ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার অংশের কাজ। চলতি মাসে এসে প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হয়।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মোট ১১ হাজার ৩কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ হয়। চার লেনের এই এক্সপ্রেসওয়েটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন-এসডব্লিউও (পশ্চিম)। সেতুর দুই পাশে ধীর গতির যানবাহন চলাচলের জন্য সাড়ে ৫ মিটার প্রশস্ত সড়ক রাখা রাখা হয়েছে।
এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচটি ফ্লাইওভারের মধ্যে একটি ২.৩ কিলোমিটার কদমতলী-বাবুবাজার লিংক রোড ফ্লাইওভার রয়েছে। অন্য চারটি ফ্লাইওভার হলো আবদুল্লাহপুর, শ্রীনগর, পুলিয়াবাজার এবং মালিগ্রামে। ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েতে জুরাইন, কুচিয়ামোড়া, শ্রীনগর ও আতাদিতে চারটি রেলওয়ে ওভার ব্রিজ রয়েছে এবং চারটি বড় সেতু রয়েছে যার মধ্যে ৩৬৩ মিটার ধলেশ্বরী -১, ৫৯১ মিটার ধলেশ্বরী -২, ৪৬৬-মিটার আড়িয়াল খান এবং ১৩৬-মিটার কুমার সেতু।
ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে থাকছে বেশ কয়েকটি বাস থামার স্থান (বে)। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংযোগ সড়ক থেকে ঢোকা এবং বের হওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এই এক্সপ্রেসওয়ের অনেকগুলো পয়েন্টে। তাই এটিকে পূর্ণাঙ্গ এক্সপ্রেসওয়ে বলা যাবে না। তবে এক্সপ্রেসওয়ে বা হাইওয়ের অনেকগুলো সুবিধা পাওয়া যাবে এতে। অবশ্য পদ্মা সেতু চালু না হওয়া পর্যন্ত এই সুবিধা পূর্ণাঙ্গভাবে পাওয়া যাবে না।
এই এক্সপ্রেসওয়েতে ছোট বড় সব মিলিয়ে সেতুর সংখ্যা হচ্ছে ২৯টি। এক্সপ্রেসওয়ের দুই প্রান্তে দুটি টোল প্লাজা রাখা হয়েছে।