বাংলাদেশ, , সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করেছে : মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ২০২২-০৩-২৮ ২১:৫৯:১৭ || আপডেট: ২০২২-০৩-২৮ ২১:৫৯:১৭

নিজস্ব প্রতিনিধি::
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ শুধু মুক্তিযুদ্ধকে বেচাকেনা করে, তাদের কোনো ইতিহাস নেই। তাদের ইতিহাস পালিয়ে পাশের দেশে আশ্রয় নেয়ার। স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছরে আওয়ামী লীগ যতবারই ক্ষমতায় এসেছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করেছে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল জিয়াউর রহমানকে মুছে ফেলা। জিয়াউর রহমানকে ইচ্ছে করলে মুছে ফেলা যায় না‘।

রোববার (২৭ মার্চ) বিকালে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতার পেছনে অবদান অনেকের আছে। আমরা কারও অবদান অস্বীকার করছি না। মুক্তিযুদ্ধে যার যা অবদান, প্রত্যেককে প্রত্যেকের অবদান স্বীকার করতে হবে। শেখ মুজিবুর রহমান, মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানি, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান স্বীকার করতে হবে, লাখো শহীদের কথাও স্বীকার করতে হবে যারা স্বাধীনতার জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। স্বীকার করতে হবে খালেদা জিয়ার কথাও।’

এ সময় তিনি এক পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় খালেদা জিয়া দুই শিশু সন্তানসহ ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি হয়েছিলেন। আর আপনারা তখন পাকিস্তানি সরকারের ভাতা খেয়েছেন। আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, আপনারা পুলিশের চাকরি করেন, পুলিশের কমিশনার হন আপনারা জনগণের সেবক। জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় আপনাদের বেতন হয়। সারাজীবন আওয়ামী লীগ সরকার থাকবে না। আপনারা সাবধান হয়ে যান। অশালীন ও উত্তোক্ত্যপূর্ণ কথা বলবেন না। এদেশের মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না। ইতোমধ্যে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এসেছে। সামনে জনগণের নিষেধাজ্ঞা আসবে। আমরা সাবধান করে বলছি, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও তারেক রহমানকে নিয়ে কেউ কটূক্তি করলে দেশবাসী তাদের কোনোদিন ক্ষমা করবে না।’

সরকার আজ আমাদের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে যেতে দেয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার বিএনপিকে ভয় পায়, তাই যেতে দেয়নি। তারা অত্যন্ত সুচারু ও পরিকল্পিতভাবে স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃতি করছে। তারা সমস্ত ইতিহাসকে বিকৃতি করে এক ব্যক্তির ইতিহাস বলে চালাতে চায়। এমন যে এক ব্যক্তি ছাড়া দেশে কেউ ছিল না। অথচ ওই সময়ে এদেশে ছিল জিয়াউর রহমানরা। তাদের সৈনিকরা যুদ্ধ করেছিল। আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এমনকি তারা জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এখন দিনের ভোট আগের রাতে করে নিয়ে যায়।

মির্জা ফখরুল তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের মন্তব্যের জেরে বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী ভোট হবে বলছেন। কোন সংবিধান? যে সংবিধান তোমরাই বারবার ছিঁড়ে ফেলেছ। বারবার কেটেকুটে ফেলে দিয়েছ। তোমাদের মতই সাজিয়ে নিয়েছ, সেই সংবিধান? এই সংবিধান জনগণ আবার রচনা করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, জনগণকে ভোটের অধিকার দিতে হবে। এ অধিকার নিশ্চিত করতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। যতই তালবাহানা করো, ওলট-পালট হও তোমাদের সময় শেষ হয়েছে বন্ধুগণ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বিষয়ে ফখরুল বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে সরকার রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। আবার এর পরে আমেরিকা থেকে আসা এক মন্ত্রীর ধমকে উল্টো দিকে চলে গেল। বন্ধুগণ, এ হচ্ছে আওয়ামী লীগ। এদের কোনো চরিত্র নেই। জনগণের প্রতি কোনো ভালোবাসা নেই। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। দেশের স্বাধীনতার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।

বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে নির্যাতন চালাচ্ছে সরকার। সরকার আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীদের খুন গুম করেছে। এসব কারণে র‌্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আমেরিকা। এ নিষেধাজ্ঞা জাতির জন্য লজ্জাকর। আর এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ী আওয়ামী লীগ সরকার।’

প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘২০০৮ সালের জরুরি সরকার তাদের নিজেদের স্বার্থে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল। আওয়ামী লীগ এখন গায়ের জোরে ক্ষমতায় বসে আছে। ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করে তারা ক্ষমতা দখল করেছে। অবৈধ সরকারের নানা কর্মকাণ্ডে মানুষ আজ হতাশ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতিতে মানুষ আজ দিশেহারা। এই সরকার দ্রব্যমূল্য কমাতে পারে না। কারণ, তারা নিজেরাই সেই মুনাফা থেকে লুটপাটে ব্যস্ত।’

আওয়ামী লীগের কোনো ইতিহাস নেই বলে মন্তব্য করেছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সমাবেশের সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রে যেতে দেয়া হয়নি। কেন দেয়া হল না? কারণ আওয়ামী লীগ জানে, আমরা সেখানে যেতে পারলে এখানের চেয়ে অনেক বেশি লোক সমাগম হতো। কিন্তু আজ ঘোষণা দিচ্ছি, আমরা প্রত্যেক বছর চট্টগ্রামে ২৭ মার্চ পালন করব। আগামী বছর ২৭ মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের সামনে পালন করব।’

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মাহবুবের রহমান শামীমের সঞ্চলানায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, এম এ সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদীন ফারুক, গোলাম আকবর খোন্দকার, কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর প্রমুখ।

ক্যালেন্ডার এবং আর্কাইভ

SunMonTueWedThuFriSat
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930    
       
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031    
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
   1234
19202122232425
262728293031 
       
293031    
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031    
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31      
   1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031