প্রকাশ: ২০২০-০৪-১৭ ১৭:৫৭:২২ || আপডেট: ২০২০-০৫-০২ ১২:৪৯:২০
করোনাভাইরাস মহামারিতে চীনে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে যথেষ্ট। যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই বলে আসছে, আক্রান্ত-মৃতের সংখ্যা নিয়ে লুকোচুরি করছে জিনপিং প্রশাসন। এর মধ্যেই নতুন করে ১২৯০ জনের মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ করল চীন।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া জানিয়েছে, উহানে করোনায় মৃতের প্রকৃত সংখ্যা ৩ হাজার ৮৬৯ জন। এ তালিকায় নতুন করে ১ হাজার ২৯০ জনের নাম যোগ করা হয়েছে।
সংশোধন করা হয়েছে আক্রান্তের সংখ্যাও। নতুন ৩২৫ জন যোগ করে উহানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৩৩৩ জন।
এতদিন এসব মানুষের মৃত্যুর তথ্য প্রকাশে বিলম্ব হওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছে শিনহুয়া। প্রথম কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, অনেকেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগেই বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং সে সময় তাদের অনেকেরই করোনার টেস্ট করা হয়নি।
দ্বিতীয়ত, মহামরির তীব্রতায় মেডিকেল কর্মীরা এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে সময়মতো তথ্য জমা দিতে পারেননি।
আরেকটি কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মহামারিতে করোনার চিকিৎসা করতে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তাদের অনেকেই কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্ক সঙ্গে যুক্ত হতে পারেনি। ফলে সেখানে আক্রান্ত-মৃতের সংখ্যা পেতে দেরি হয়েছে।
এদিকে, সংশোধনের পরও চীনের মূল ভূখণ্ডে মোট মৃতের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, স্পেনের চেয়ে অনেক কম। করোনার উৎস হয়েও দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬৩৬ জন। আর আক্রান্ত হয়েছেন ৮৩ হাজার ৭৫৩ জন।
৩১ ডিসেম্বর চীন নতুন ধরনের নিউমোনিয়ার সংক্রমণের কথা প্রকাশ করে। পরে সেই নিউমোনিয়ার কারণ হিসেবে নতুন এই করোনাভাইরাসকে শনাক্ত করা হয়, যাকে বলা হচ্ছে নভেল করোনাভাইরাস। আর এ ভাইরাসের সংক্রমণে যে রোগ হয়, তাকে বলা হচ্ছে কোভিড-১৯।
চীন প্রথম এ ভাইরাসে কারও মৃত্যুর কথা জানায় ১১ জানুয়ারি। কিন্তু ততদিনে এত দ্রুত এ ভাইরাস ছড়াতে শুরু করেছে যে জানুয়ারির শেষ দিকে উহানসহ হুবেই প্রদেশের বড় একটি এলাকা লকডাউন করে ফেলা হয়। নানা কঠোর পদক্ষেপের ফলে মার্চের শুরু থেকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে চীনের পরিস্থিতি। কিন্তু ততদিনে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে ভাইরাসের বিস্তার ব্যাপক মাত্রা পেতে শুরু করেছে।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর গত সাড়ে তিন মাসে বিশ্বের ১৮৫টি দেশে ২১ লাখ ৫৮ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার মানুষের।
আক্রান্ত এবং মৃত্যু- দুদিক দিয়েই যুক্তরাষ্ট্র এখন শীর্ষে। সেখানে ৬ লাখ ৭১ হাজার মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৩৩ হাজার ২৮৫ জনের।