বাংলাদেশ, , সোমবার, ৬ মে ২০২৪

অভাবী মানুষ ত্রাণ পাচ্ছে কিনা,নজরদারি করবেন সচিবরা : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ২০২০-০৪-২০ ১৬:৩১:৩৯ || আপডেট: ২০২০-০৪-২০ ১৬:৩১:৩৯

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত ত্রাণ সহায়তা ঠিকভাবে পৌঁছাচ্ছে কিনা তা কঠোরভাবে নজরদারি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি জেলার জন্য একেকজন সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যারা নজরদারি করবেন এবং সে অনুযায়ী রিপোর্ট করবেন।’

সোমবার গণভবন থেকে ঢাকা বিভাগের চার জেলা ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলার কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে এখন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সীমিত। আমি একেকজন সচিবকে একেকটি জেলা মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দিয়েছি। জেলাগুলোতে সঠিকভাবে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে কি না, অভাবী মানুষের কাছে খাদ্য পৌঁছাচ্ছে কি না, তারা সেটি দেখবেন এবং আমার কাছে রিপোর্ট করবেন।’

তিনি বলেন, ‘এছাড়া আমাদের আওয়ামী লীগের নেতারা রয়েছেন। তাদের প্রত্যেককে আমি নির্দেশ দিয়েছি। সবাই দেখবেন কোনো মানুষ যেন খাবারের অভাবে কষ্ট না পায়। আমাদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আছে। তারা এর আগে ধান কাটতে কৃষকদের সহায়তা করেছে। তারাও এখন কাজ করছে।’

শ্রমিকদের আনা নেওয়ার দায়িত্ব মালিকের:

গত ৫ এপ্রিল পোশাক কারখানাগুলো খুলে দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সুপারভাইজারকে দিয়ে শ্রমিকদের ফোন করানো হলো। এভাবে শ্রমিকদের ডেকে আনা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। মাইলের পর মাইল হেঁটে এসেছে। অনেক বাবা তার মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। গাড়িঘোড়া বন্ধ ছিল। শ্রমিকদের আনার ব্যবস্থা যেমন করা হবে, নেওয়ার ব্যবস্থাও করতে হবে।’

গাজীপুরে শিল্প কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘লকডাউন নিশ্চিত করে সীমিত পর্যায়ে হলেও উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে। সেটি কীভাবে করা যায় নিশ্চিত করতে হবে।’

বেশি পরিমাণে ধান-চাল কিনবে সরকার:
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কিন্তু ধান সংগ্রহ করার ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়ে দিয়েছি। সাধারণত বোরোতে আগে যা আমরা নিতাম, তার থেকে অনেক বেশি আমরা নিচ্ছি। এখন প্রায় আমরা আট লাখ মেট্রিক ধান, ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল, দুই লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আতপ এবং ৮০ হাজার মেট্রিক টন গমসহ সর্বমোট ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য আমরা সংগ্রহ করব। এটা সরকার কিনে রাখবে। তাতে আমাদের আর ভবিষ্যতে কোনো অভাব হবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষকে খাবার সহযোগিতা দিতে পারব। আমাদের খাদ্যের কোনো অভাব হবে না। তাছাড়া আমাদের এখন ধান উঠছে। ধান কাটাও শুরু হয়ে গেছে। আগামীতেও ফসল উঠবে। সেই সঙ্গে তরিতরকারি ফলমূল যে যা পারেন উৎপাদন করবেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ৯৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছি। যা জিডিপির ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। কৃষিখাতে আরও বেশি। মাত্র ৪ শতাংশ সুদে আমরা কৃষি ঋণ দিচ্ছি। কৃষি মানে শুধু ধান ফলানো না। একেবারে মৎস্য, পোল্ট্রি থেকে শুরু করে ফলমূল, ফুল যা যা আছে-সবকিছু মিলেই এই প্যাকেজটা। কাজেই কোনো সেক্টর বাদ যাচ্ছে না। যে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে, তা শুধু এই বছরের জন্য না। আগামী তিন বছর দেশের অর্থনীতির চাকা যাতে সচল থাকে সেটা মাথায় রেখেই এই প্রণোদনা অব্যাহত রাখা হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই উৎপাদিত পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে আমাদের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। কোনো বাজারে যেন কোনো জিনিসের অভাব না হয়। হাটও বসছে। আমরা বলে দিয়েছি, খোলা বড় জায়গায় যথাযথভাবে দূরত্ব রেখে হাট-বাজার বসবে। ক্রয়-বিক্রয় হবে। যাতে মানুষের জীবনটা একেবারে স্থবির না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এই ব্যবস্থা নিয়েছি।’

সরবরাহকারীরা চিকিৎসা সরঞ্জাম ঠিক দিচ্ছে কিনা দেখার নির্দেশ:
জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স শেষে প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে উপস্থিত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় কথা বলেন স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদ উল্লাহ।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ ও গাজীপুর জেলায় করোনা টেস্টের পিসিআর ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে। তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের যতায়াতের জন্য মাইক্রোবাস নির্দিষ্ট করা আছে। এটা ঠিকমতো কাজ করছে কিনা সেই বিষয়ে আমরা নজর দিবো। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আরও সমন্বয় করা হবে।’

সিএমএসডির পরিচালক জানান, তাদের কাছে সংরক্ষিত পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্টের (পিপিই) মধ্যে ৭০ শতাংশ দেশে উৎপাদিত আর বাকি ৩০ শতাংশ চীন থেকে আমদানিকরা। এন৯৫ মাস্ক সহজলভ্য না। এর সমপর্যায়ের কেএন ৯৫ এগুলো আছে। যা সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর।

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে দুই লাখ কেএন ৯৫, এফএফপিটু এসেছে। এগুলো বিভিন্ন কোভিড হাসপাতাল,পিসিআর ল্যাবের সুরক্ষার জন্য পাঠিয়েছি। এটা পর্যাপ্ত এই সপ্তাহের মধ্যে পৌঁছে যাবে সংশ্লিষ্ট স্থানে। আর আমাদের কাছে কিটও পর্যাপ্ত আছে।’

এসময় সিএমএসডির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদ উল্লাহকে উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আমাদের মন্ত্রীর কাছে কিছু ছবি পাঠিয়েছি। যারা সাপ্লাই দেয়, তারা কি সঠিকভাবে সবকিছু দিচ্ছে কিনা? মহানগর হাসপাতালে কিছু জিনিস গিয়েছে। নাম দিচ্ছে ভালো কিন্তু সঠিকভাবে ঠিক জিনিসগুলো যায়নি। এটা আপনাদের দেখা উচিত। আপনারা দিয়ে দিচ্ছেন,বলে দিচ্ছেন। কিন্তু যারা সাপ্লাইয়ার তারা ঠিকভাবে দিচ্ছে কিনা কিংবা সঠিক জিনিসটা কিনছে কিনা এটা দেখা দরকার এটা দেখবেন। এটা নিয়ে আমি বেশি কিছু বলতে চাই না। আমি মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি ছবিটা,এটা যাচাই করে দেখার জন্য।’

পরে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদ উল্লাহ বলেন,‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের কেন্দ্রীয় ওষুধাগারসহ একটা কমিটি করা আছে। যারা যে সরবরাহটা আসবে তার কারিগরি দিকগুলো ঠিক আছে কিনা তার পরীক্ষা করার জন্য। ইতিমধ্যে আমরা প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার পিপিই নিম্নমানের হওয়ার নষ্ট করেছি। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। হয়তো জরুরি প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে আমাদের ভুল হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু এখন আমরা চাচ্ছি আমাদের এই ভুলগুলো যাতে না হয়। সঠিকভাবে বিতরণটা করতে পারি সেই উদ্যোগটা আমরা নিয়েছি।’

পরে প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত মোবাইলের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘এন৯৫ লেখা বক্স কিন্তু ভিতরে যে জিনিটা সেটা সঠিক থাকে কিনা,এটা একটু আপনাদের দেখা দরকার। এটা একটু নজর দেন। যেহেতু এখন লাইভে আছেন, আমরা কথা বলছি। লেখা আছে এন৯৫ কিন্তু সবসময় জিনিসটা সঠিক যাচ্ছে না। এর সাপ্লাইয়ার কে? মহানগর হাসপাতালে (বাবুবাজার) এটা গেছে, এটাতো কোভিডের জন্য ডেডিকেটেড। যদি এটা কিছু কিছু জায়গায় হয় তাহলে তো তা ঠিক না। আপনারা যাদেরকে এই ব্যবসাটা দেন, যারা নেয় বা সাপ্লাই দেয়…। বক্সতো ঠিক আছে কিন্তু বক্সের ভিতরের জিনিসগুলো ঠিক আছে কিনা সেটার জন্য নজরদারিটা বাড়ানোর প্রয়োজন। বা যিনি এটা গ্রহণ করবেন তিনি যেন দেখে শুনে তা গ্রহণ করেন। খালি আমি এইটুকু বলতে চাই।’

ক্যালেন্ডার এবং আর্কাইভ

SunMonTueWedThuFriSat
   1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031 
       
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031    
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
   1234
19202122232425
262728293031 
       
293031    
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031    
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31      
   1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031