প্রকাশ: ২০২০-০৫-০৩ ১৬:২৯:৩৪ || আপডেট: ২০২০-০৫-০৩ ১৬:২৯:৩৪
তৃণমূলনিউজ প্রতিনিধি::
চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানাধীন ডিসি রোডে এক কলেজ শিক্ষকের বাসায় চুরির ঘটনায় চোর চক্রের দলনেতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একই ঘটনায় চোরাই মালামালও উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, দলনেতা জসিম উদ্দিন (৩২), তার সহযোগি মো. জুয়েল (২০), মো. ইমরান (২০) ও আশরাফুল ইসলাম সোহেল ওরফে বাবু (১৯)। রোববার (৩ মে) গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে শনিবার (২ মে) নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গত ১৮ এপ্রিল দিনে দুপুরে ডিসি রোডের পশ্চিম বাকলিয়া এলাকায় বাঁশখালীর নজির আহাম্মদ কলেজের ইংরেজির প্রভাষক হুমায়ুন কবিরের বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। সে সময় ওই শিক্ষক স্বপরিবারে গ্রামের বাড়ি লোহাগাড়ায় ছিলেন।
একইদিন বিকেল ৫টার দিকে বাসার মালিকের কাছ থেকে বাসার দরজার তালা ভাঙার বিষয়টি জানতে পারেন কলেজ শিক্ষক। পরদিন বাসায় ফিরে তিনি দেখতে পান, তার স্ত্রীর দুই সেট গলার হার, এক সেট কানের দুল, চারটি আংটি, মিলে সাড়ে ৬ ভরি স্বর্ণ ও এ্যামিটেশনের বিভিন্ন অলংকার চোরেরা নিয়ে যায়। এরপর ২২ এপ্রিল বাকলিয়া থানায় মামলা করেন কলেজ শিক্ষক। এরপর সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে পুলিশ জানতে পারে, ১৮ এপ্রিল বিকাল ৪ টা ১০ মিনিট থেকে বিকাল সাড়ে ৪টার মধ্যে চুরির ঘটনা ঘটেছে।
এরপর সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে অভিযানে নেমে শনিবার (২ মে) চোর চক্রের দলনেতা জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি চুরি হওয়া একটি স্বর্ণের হার, দুটি স্বর্ণের ঝুমকা, যার ওজন প্রায় ৪ ভরি ৭ আনা এবং তার ঘরে বিছানার তোষকের নিচ থেকে চোরাইকাজে ব্যবহৃত একটি লোহার কোরাবারি উদ্ধার করে পুলিশ।
একইভাবে ঘটনায় জড়িত ইমরানকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তার ভাড়া ঘর থেকে একটি স্বর্ণের আংটি উদ্ধার করা হয়। জসিম ও ইমরানের স্বীকারোক্তি মতে অভিযান চালিয়ে মো. জুয়েলকে পাঁচলাইশ থানাধীন শুলকবহর মির্জারপুল ভাই ভাই কলোনীর তার অস্থায়ী ভাড়াঘর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় চোরাই যাওয়া মালামালের মধ্যে এক ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের হার, একটি স্বর্ণের আংটি এবং চারটি এ্যামিটেশনের ছুড়ি চোরাই মালামাল হিসেবে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার তিনজনের তথ্যমতে আশরাফুল ইসলাম সোহেল ওরফে বাবুকে পাঁচলাইশ থানাধীন হামজারবাগ রহমানিয়া স্কুলের মাঝের গলি, গণি কন্ট্রাক্টরের বাড়ির ভাড়া ঘর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার ঘর থেকে চোরাইকাজে ব্যবহৃত একটি লোহার ছেনা, একটি প্লাস্টিকের বাটযুক্ত লোহার কাটার এবং ৫টি স্বর্ণের বেবি আংটি চোরাই মালামাল হিসেবে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মালামালগুলো উক্ত কলেজ শিক্ষক তার চোরাই যাওয়া মালামাল বলে শনাক্ত করেন।
বাকলিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা পরস্পর যোগসাজসে প্রতিদিন সকাল ৭-৮ টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় যায়। তারা কখনো বাসা ভাড়ার নাম করে, কখনো আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবের সাথে দেখা করার নাম করে কোন বাসা তালাবদ্ধ কিংবা খালি আছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করে।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে ১-২ মিনিটের মধ্যে তালা ভেঙ্গে অথবা জানালার গ্রীল ফাঁক করে তারা বাসার ভিতরে প্রবেশ করে চুরি করে। এই পদ্ধতিতে তারা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গত দুইমাসে অন্তত ২০-২৫টি চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।