বাংলাদেশ, , রোববার, ৫ মে ২০২৪

সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’ মোকাবিলায় চট্টগ্রামের প্রস্তুতি

প্রকাশ: ২০২০-০৫-১৯ ১৭:০৪:২১ || আপডেট: ২০২০-০৫-১৯ ১৭:০৪:২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’ -এর ক্ষয়ক্ষতি জানমাল ও সম্পদ রক্ষায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রামের প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের এর সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় চট্টগ্রামে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র। এছাড়া আরও প্রায় চার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন জানান, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় আট লাখ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। এর মধ্যে ৪৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে পারবেন পাঁচ লাখ মানুষ। এছাড়া দুই হাজার ২৬৯টি প্রাথমিক এবং এক হাজার ২৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আরও তিন লাখ লোক আশ্রয় নিতে পারবেন।

এছাড়া ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৩৪৯ মেট্রিক টন চাল, ৬৮১ বান্ডিল ঢেউটিন এবং ৫০০টি তাঁবু মজুত রাখা হয়েছে। যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ফোন নম্বর: ০৩১-৬১১৫৪৫, ০১৭০০-৭১৬৬৯১ এ যোগাযোগ করা যাবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, আবহাওয়া অধিদফতরের সতর্ক সংকেত অনুযায়ী ‘অ্যালার্ট-৩’ জারি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের বহিঃনোঙরে ও কর্ণফুলী নদীতে মোট ১৬০টি জাহাজ অবস্থান করছে। এর মধ্যে বড় জাহাজগুলোকে (মার্চেন্ট শিপ) কুতুবদিয়া ও সেন্টমার্টিন উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ঘূর্ণিঝড় চলাকালে জাহাজগুলোর ইঞ্জিন চালু রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া লাইটারেজ ও মাছ ধরার ছোট জাহাজগুলোকে কর্ণফুলী নদীর শাহ আমানত সেতুর উজানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরে তিনটি ঘূর্ণিঝড় নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। এর মধ্যে নৌবিভাগের নিয়ন্ত্রণকক্ষের নম্বর : ০৩১-৭২৬৯১৬। পরিবহন বিভাগের নিয়ন্ত্রণকক্ষের নম্বর : ০৩১-২৫১০৮৭৮ এবং বন্দর সচিবের নিয়ন্ত্রণকক্ষের নম্বর : ০৩১-২৫১০৮৬৯।

এদিকে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান, চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সেজন্য চট্টগ্রামে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ২৮৪টি মেডিকেল টিম গঠন করেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর কর্মস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ১৯৪টি অ্যাম্বুলেন্স এবং দুই লাখ পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, দেড় লাখ খাবার স্যালাইন ও পর্যাপ্ত জরুরি ওষুধ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানকারীদের মাস্কসহ সুরক্ষা বিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আম্পান মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণে মঙ্গলবার দুপুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। সকাল থেকে উপকূলীয় এলাকা এবং পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থানরত জনসাধারণের মাঝে সচেতনতার জন্য মাইকিং শুরু করেছে চসিক। সম্ভাব্য দুর্যোগপরবর্তী সময়ের জন্য চসিক শুকনো খাবার, পর্যাপ্ত সুপেয় পানির ব্যবস্থা এবং চিকিৎসা সেবাদানের জন্য মেডিকেল টিম ও পর্যাপ্ত ওষুধপত্র প্রস্তুত রেখেছে।

এছাড়া দুর্যোগ পূর্ববর্তী, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে অবস্থানের জন্য উপকূলীয় এলাকায় চসিক পরিচালিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সর্বদা প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য ও সহযোগিতার প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য চসিকের পক্ষ থেকে নগরবাসীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

চসিকের কন্ট্রোল রুমের ফোন নম্বরগুলো হলো: ০৩১-৬৩০৭৩৯, ০৩১-৬৩৩৬৪৯।

এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ তাদের সদর দফতরে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলেছে। এছাড়া দুর্যোগকালীন জরুরি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সিএমপির সকল থানার অফিসার ইনচার্জসহ সকল স্তরের পুলিশ সদস্যদের সিএমপি কমিশনারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে নগরবাসীকে নিয়ন্ত্রণকক্ষের নম্বরে (০১ ৪০০ ৪০০ ৪০০ ও ০১৮ ৮০ ৮০ ৮০ ৮০) যোগাযোগ করতে সিএমপির পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ছয় হাজার ৬৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক ও রেড ক্রিসেন্টের ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবকও প্রস্তুত আছেন উপকূলীয় এলাকায়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, হাইজিন কিডস মজুতের খবর পাওয়া গেছে।

প্রসঙ্গত, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’ প্রায় ১৪ কিলোমিটার গতিতে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে। আজ (মঙ্গলবার) সকাল পর্যন্ত গত ১২ ঘণ্টায় সুপার সাইক্লোনটি বাংলাদেশের দিকে ১৬৫ কিলোমিটার এগিয়ে এসেছে।

সকাল ৬টা পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদফতর বলেছে, পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে।

ঘূর্ণিঝড়টি আজ শেষরাত থেকে আগামীকাল (বুধবার) বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ক্যালেন্ডার এবং আর্কাইভ

SunMonTueWedThuFriSat
   1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031 
       
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031    
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
   1234
19202122232425
262728293031 
       
293031    
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031    
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31      
   1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031